তিনি শনিবার (৬ জুলাই) বিকালে কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মেদ সড়কে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর সভাপতিত্বে ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহবুবের রহমান শামীমের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক, মহানগর বিএনপির সাবেক আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ভিপি হারুনুর রশীদ, ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনাম।
সভাপতির বক্তব্যে বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ জিয়া পরিবারকে অত্যন্ত ভালোবাসে। বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ সংগ্রাম করেছেন। তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন এবং দেশকে উন্নত করার জন্য তাঁর বহু অবদান রয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া যদি আজকে মুক্ত থাকতো তাহলে এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারত না। এই সরকারের যারা হাজার কোটি টাকা চুরি করেছে তাদেরকে ধরা হয় না। অথচ সামান্য অজুহাতে বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করে রেখেছে। উপ মহাদেশের এই জনপ্রিয় নেত্রীকে নিয়ে আওয়ামী লীগ এখন নোংরা রাজনীতি করছে। তার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতির বিরোধিতা করছে সরকার। আমরা সরকারকে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে তাঁকে বিদেশে চিকিৎসা করার সুযোগ দেওয়া হোক। কারণ, তিনি গণতন্ত্রের নেত্রী।
গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, আওয়ামী লীগ আজ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গণতন্ত্রের আশপাশেও তারা নেই। তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য সব গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। জনগণের কাছে তাদের কোন দায়বদ্ধতা নেই। প্রশাসন থেকে শুরু করে প্রতিটি সেক্টরকে দলীয়করণ করে রাষ্ট্রকে পঙ্গু করে ফেলেছে। শুধু ক্ষমতার জন্য তারা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে ভেঙে চুরে চুরমার করে দিয়েছে। তাই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফেরাতে হলে জনগণকে জেগে ওঠতে হবে।
এস এম ফজলুল হক বলেন, গণতন্ত্র আজকে শেখ হাসিনার কারাগারে বন্দী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের প্রতিটি সেক্টরে লুটপাট কায়েম করেছে। মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, গণমাধ্যমের অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করেছে। এই স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার জন্য সবাইকে রাজপথে নামতে হবে।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বেগম খালেদা জিয়া এক কিংবদন্তী নারী। যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তিনি ২০০৮ সালে চট্টগ্রামের লালদিঘীর মাঠ থেকে দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও, স্লোগান শুরু করেছিলেন। আজকে তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন, আমার অধিকার, আমার দেশ, টেক ব্যাক বাংলাদেশ। আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আজিজ বেনজীর সহ মাফিয়ারা বাংলাদেশকে খামচে ধরেছে। ওয়ান ইলাভেনের সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজপথে ছিল। আবারো গণতন্ত্র ও বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে।
এ এম নাজিম উদ্দীন বলেন, রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করে রেখেছে। শুধু সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়ার ওপর নির্মম জুলুম নেমে এসেছে।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, আজকে আমাদের দাবি একটা, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি। তাকে মুক্তি দিতে হবে। তার মুক্তির জন্য রাজপথ দখলে নিতে হবে। আজকে দেশের মানুষের কোন অধিকার নেই। গণতন্ত্রের নামে মাফিয়ার শাসন চলছে।
ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সরকারের অন্যায় চাপে কখনো আপোস করেননি। তার জনপ্রিয়তাকে এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার ভয় পায়। এ জন্যই তার ওপর এত জুলুম নির্যাতন নেমে এসেছে। তাই আমাদের শপথ নিতে হবে, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে কেউ ঘরে ফিরে যাবো না। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবো, ইনশাআল্লাহ ।