যশোরের কেশবপুরে শীতের সকালে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্য চাল-কুমড়ার বড়ি দেওয়ার উৎসবে মেতে উঠেছে প্রতিটি বাঙ্গালী ঘরের গৃহ বধুরা।
কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের সকালে গাঁয়ের মাঠে শাড়ী বা নতুন (নেটের) জালে চাল-কুমড়ার বড়ি দেওার ধুম পড়েছে। শীত এলেই গৃহ-বধুর সাথে সাথে গাঁয়ে মেয়েরাও নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে কুমড়া ও ঠিকরা কলাইয়ের বড়ি দিতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন । সেই প্রাচীনকাল থেকে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে কুমড়ার বড়ি খুবই জনপ্রিয় একটি রেসিপি। সরেজমিনে উপজেলার ত্রিমোহিনী, সাগরদাঁড়ী, বিদ্যানন্দকাটি, মঙ্গলকোট, গৌরিঘোনা, সুফলাকাটি, পাঁজিয়া, কেশবপুর সদর ও পৌরসভা, সাতবাড়ীয়া, হাসানপুর সহ বিভিন্ন গ্রাাম ঘুরে দেখা গেছে, এই শীতে কুমড়ার বড়ি দিতে চালকুমড়া আর (ঠিকরা)মাসকালাইয়ের চাহিদা বেড়ে গেছে। ভালুকঘর, রামচন্দ্রপুর, ব্যাসডাঙ্গা, সুজাপুর, পাজিঁয়া, কাটাখালি, দেউলি, শ্রীফলা, ভান্ডারখোলা, হাসানপুর, বগা, সাগরদাঁড়ি, ফতেপুর, শিকারপুর, শ্রীরামপুর, জাহানপুর, সাতবাড়িয়া, ত্রিমোহিনী, বালিয়াডাঙ্গাসহ উপজেলার বিভিন্ন গায়ের বধুরা চালকুমড়ার বড়ি তৈরি করে ব্যস্ত সময় পার করছে। ভালুকঘর গ্রামের গৃহবধু আমেনা বেগম জানান, প্রতি বছরে শীত আসলে চাল-কুমড়া আর মাসকলাই মিশিয়ে এই বড়ি তৈরি করা হয়। ফতেপুর গ্রামে আছিয়া বেগন বলেন, চাল-কুমড়ার বড়ি খেতে খুবই মজা। বিভিন্ন প্রকার তরকারির সাথে রান্না করে খেতে খুব মজা। জাহানপুর গ্রামের আলেয়া বেগম বলেন, রাতভর মাসকলাই ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে শীতকে উপেক্ষা করে মাসকলাই বেটে পেস্ট করে এর পর ছিদ্র করা বাসনের কাঁকই দিয়ে চাল-কুমড়া কুরে মলমের মত তৈরি করে দুটিকে একসাথে মিশিয়ে তৈরী করা হয় কাঙ্খিত কুমড়া-বড়ি। পাড়া মহল্লায় অনেক পরিবার একত্রিত হয়ে বড়ি তৈরি করেন। ধনী গরীব সবাই এ বড়ির প্রতি দূর্বল কেননা বড়ি প্রতিটি তরকারিতে বাড়তি স্বাদ এনে দেয়। তাই এই কুমড়া বড়ি মানুষের কাছে অত্যান্ত জনপ্রিয় একটি শীতের রেসিপি যা ধনী গরীব সকলেই মন ভরে উপভোগ করে থাকে।